আবদুর রহিম হারমাছি, প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2020-12-31 00:46:26 BdST
যেসব ঋণ খেলাপি ২০১৯ সালে যারা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ নিয়েছিলেন, তারাও ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিস্তি না দিলে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে হবেন না।
বুধবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে সামগ্রিক ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি ২০১৯ সালে (ওই বিশেষ সুবিধায়) পুনঃতফসিল/এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, ২০১৯ সালের ওই সার্কুলারের আওতায় (বিশেষ সুবিধায়) পুনঃতফসিল/এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগসহ অন্যান্য পুনঃতফসিল/এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যেসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তা প্রযোজ্য হবে।
“এক্ষেত্রে পুনঃতফসিল/এককালীন এক্সিটের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগগ্রহীতা কর্তৃক তার ঋণ/বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধের জন্য প্রদত্ত মেয়াদের যে অংশ ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখের মধ্যে পড়বে শুধুমাত্র সে অংশ ডেফার্ড (এককালীন এক্সিটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৮০ দিন) হিসেবে বিবেচিত হবে।”
করোনাভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঋণ শ্রেণিকরণে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। মহামারীর প্রকোপ দীর্ঘায়িত হওয়ায় গত ১৫ জুন আরও তিন মাস বাড়িয়ে তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর সেই সময় আরও তিন মাস বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুবিধা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, কোভিড-১৯ মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অনেক শিল্প, সেবা ও ব্যবসা খাত তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।
তাই ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ঋণ/বিনিয়োগের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ওই ঋণ/বিনিয়োগ তার চেয়ে বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।
তবে কোনো ঋণের/বিনিয়োগের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা যথাযথ নিয়মে শ্রেণিকরণ করা যাবে।
২০১৯ সালের মে মাসে ঋণ খেলাপিদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে ওই টাকা পরিশোধের সুযোগ দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই সুযোগ নিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত বা পুনঃতফসিল করেছিলেন খেলাপরিা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এই অঙ্ক মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
বিশেষ সুবিধা ও ছাড়ের কারণে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর- এই নয় মাসে নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হয়নি। তবে কিছু উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগে কিছু ঋণ শোধ করেছেন।