লাইফস্টাইল ডেস্ক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2021-09-19 17:58:48 BdST
এমনকি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগার ঝুঁকিও কমাতে পারে। আর এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের করা গবেষণায়।
‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’য়ে প্রকাশি এই গবেষণার জন্য, ৮০ জন সুস্থ মহিলাকে যারা দিনে অপর্যাপ্ত ডি গ্রহণ করছিলেন তাদের প্রতি সপ্তাহ ৫০ হাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট (আইইউ) অনুযায়ী ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে দেওয়া হয়। ১২ সপ্তাহ পরে তাদের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটার উন্নতি চোখে পড়ে।
পর্যবেক্ষণে আরও দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের বৃক্ক ও যকৃতের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রক্তে ক্যালসিয়ামের পর্যাপ্ত মাত্রার ওপর নির্ভর করে। আর দেহে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য দরকার হয় ভিটামিন ডি।
ভিটামিন ডি ও অন্ত্রের সুস্থতার ওপর করা গবেষণার ভিত্তিতে গবেষকরা বলেন, সুস্থ দেহে ভিটামিন ডি’র প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
অন্ত্র বৈচিত্র্যময় মাইক্রোবায়োটা থাকা সুস্থতার চাবিকাঠি। অন্ত্রে থাকা কোটি কোটি মাইক্রোবায়োটা জীবাণু দিয়ে গঠিত যা, বিপাকীয় কার্যকারিতা বাড়ায়। সুস্থ অন্ত্র মস্তিষ্কের সঙ্গেও জড়িত যা স্নায়ু ও হরমোনে সংকেত পাঠিয়ে দেহের ভারসাম্য বজায় রাখে।
শরীরের সুস্থতায় অন্ত্র সুস্থ রাখা জরুরি। যদিও ‘প্রিবায়োটিক’ ও ‘প্রোবায়োটিক’ খাওয়া উপকারী। তবুও সম্পূরক হিসেবে ভিটামিন ডি ও অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটার দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত।
‘ফ্রন্টিয়ার্স অব ইমিউনোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র আছে। আর দুই ক্ষেত্রের জন্যই ভিটামিন ডি গ্রহণ উপকারী।
যাদের অন্ত্রে প্রদাহজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য এটা বেশি প্রয়োজন।
এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে ‘ইট দিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ‘সাইয়েন্টিফিক রিপোর্ট’য়ে প্রকাশিত গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সপ্তাহে ৫০,০০০ আইইউ ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, দৈনিক নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডায়াটেরি রেফারেন্স ইনটেক (ডিআরআই)’ অনুযায়ী ৭০ বছরের নিচের লোকদের দৈনিক কমপক্ষে ১৫ মাইক্রোগ্রাম এবং এর বেশি বয়সের অধিকারীদের ২০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে বলা হয়।
দৈনিক সর্বোচ্চ ভিটামিন ডি গ্রহণের মাত্রা ১০০ মাইক্রোগ্রাম বা ৪০০০ আইইউ বলে জানায় ‘ডিআরআই’।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা ডিআরআই নির্ধারিত ‘ইউএল’য়ের চেয়ে পরিমাণে বেশি গ্রহণ করেছিল। ভিটামিন ডি গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার খুবই কম।
তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা হলে ‘হাইপারক্যালসেমিয়া’ হতে পারে। অর্থাৎ রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের উপস্থিতির কারণে হাড় দুর্বল হওয়া, বৃক্কে (কিডনি) পাথর হওয়া এমনকি হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
অন্ত্র ও হাড়ের সুস্থতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি ভূমিকা রাখে। সপ্তাহে ত্বকে ৫ থেকে ৩০ মিনিট রোদ লাগানো বা ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উপকারী।
তবে কেউ যদি সম্পূরক হিসেবে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে চায় তবে আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
অতিরিক্ত ভিটামিন সি’য়ের প্রভাব