জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2019-10-07 22:09:51 BdST
সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, আমরা যেন এক মৃত্যু উপত্যকায় বসবাস করছি।”
চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব আবরারের মৃত্যুর ঘটনা জানার পর বিবৃতি দেন।
গত ৩ অক্টোবর রাতে তিনি সিঙ্গাপুর যান। সেখানে চিকিসার পর রোববার রাতে এশিয়া প্যাসিফিক ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের সভায় যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানভেরা গেছেন ফখরুল।
আবরার হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে ফখরুল বিবৃতিতে বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যরাতের মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের
মাত্রা যেন লাগামহীন হয়ে গেছে। স্বৈরাচারী সরকার দেশের প্রতিবাদী মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত করে দেশকে ভীতির কালো মেঘে ঢেকে দিয়েছে, যাতে সরকারের অপকর্ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ লিখতে, বলতে কিংবা টু-শব্দ উচ্চারণ করতেও সাহস না পায়।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের গণধিকৃত সকল স্বৈরাচারকে টেক্কা দিয়ে জনসমর্থনহীন আওয়ামী সরকার এখন মানুষের জানমালের নিরাপত্তাকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। দেশে এখন জঙ্গলের শাসন চলছে বলেই একজন মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদে গৃহে ফেরার নিরাপত্তাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে।”
ফখরুল বলেন, “সরকারের আসকারায় দুষ্কৃতিকারীরা দেশব্যাপী লাগামহীন খুন জখমের খেলায় আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে। স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের হিংস্ররূপ দেশের মানুষকে বোবা করে ফেলেছে। অজানা আশঙ্কা, আতংক আর ভয়ের এক বিষাদময় পরিবেশ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
“আজ দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা আবারও প্রমান করল বর্তমান স্বৈরশাহী দেশের মানুষের প্রতিবাদী কন্ঠকে নির্মূল করে নিজেদের হিটলারী শাসন বজায় রাখতে চায়।জনগণ তাদের এই মনোবাঞ্ছা কোনোদিনই পূরণ হতে দেবে না। মত প্রকাশ ও স্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে অতীতের সংগ্রামী ঐতিহ্যের ধারায় বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে দ্বিধা করবে না।
আবরারের আত্মার মাগফেরাত ও তার শোকাগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মির্জা ফখরুল।
রোববার রাত ২টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই হলের শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডেকে নিয়ে যায় কয়েকজন। পরে শিক্ষার্থীরা রাত ২টার দিকে হলের দ্বিতীয়তলার সিঁড়িতে তার লাশ পায়।
ছাত্রলীগ কর্মীরা আবরারকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে সহপাঠীদের বরাতে খবর দিয়েছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা।
আবরার হত্যায় জড়িত সন্দেহে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ঢাকার চকবাজার থানায় আবরারের বাবার করা মামলায় যে ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এই নয়জনের নামও রয়েছে।