জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2019-10-09 18:02:14 BdST
তবে তিনি বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট তাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে।
বুয়েটছাত্র আবরারকে তার হলে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল বুয়েটে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি তুলেছেন, যার একটি হল ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
জাতিসংঘ ও ভারত সফর থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এলে এই সময়ে আলোচিত বুয়েটের প্রসঙ্গটিও আসে।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “…একটা ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি উঠাবে যে ছাত্র রাজনীতি ব্যান। আমি নিজেই যেহেতু ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি। সেখানে আমি ছাত্র রাজনীতি ব্যান বলব কেন?”
বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের উজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আসলে এই দেশের প্রতিটি সংগ্রামের অগ্রণী ভূমিকা কিন্তু ছাত্ররাই নিয়েছেন।
“আমি ছাত্র রাজনীতি করেই কিন্তু এখানে এসেছি। দেশের ভালো-মন্দের বিষয়টা ওই ছাত্রজীবন থেকে আছে বলেই আমরা দেশের জন্য কাজ করতে পারি। কিন্তু যারা উড়ে এসে বসে, তারা আসে ক্ষমতাটাকে উপভোগ করতে। তাদের কাছে তো দেশের ওই চিন্তা-ভাবনা থাকে না।
“রাজনীতি একটা শিক্ষার ব্যাপার, প্রশিক্ষণের ব্যাপার, জানার ব্যাপার। সেটা ছাত্ররাজনীতি থেকেই কিন্তু ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, “ বলেন তিনি।
বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি কলুষিত করার জন্য সামরিক শাসকদের দায়ী করেন শেখ হাসিনা।
“নষ্ট রাজনীতি যেটা, সেটা তো আইয়ুব খান শুরু করে দিয়েছিল, আবার জিয়াউর রহমান এসে শুরু করল একইভাবে এবং দুইজনের ক্ষমতা দখলের চরিত্র একই রকম। আমাদের দেশের অসুবিধাটা হল, বারবার মিলিটারি রুলাররা এসেছে। আর এসে এসে মানুষের চরিত্র হরণ করে গেছে।
“একবারে ছাত্র রাজনীতি ব্যান করে দিতে হবে, এটা তো মিলিটারি ডিক্টেটরদের কথা। আসলে তারা এসে তো সবসময় পলিটিকস ব্যান …. স্টুডেন্ট পলিটিক্স ব্যান তারাই করে গেছে।”
বুয়েট শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ থেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে
“এই যে একটা সন্ত্রাসী ঘটনা বা এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই তো সংগঠন করা নিষিদ্ধ আছে। বুয়েট যদি মনে করে, তাহলে তারা বন্ধ করে দিতে পারে। এখানে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করব না,” বলেন সরকার প্রধান।
এর আগে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে ছাত্রলীগ নেতাদের ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের’ শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারের অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা একবার হিসাব করে দেখেন একজন ছাত্রের পেছনে সরকার কত টাকা খরচ করে। একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা এক গ্রাজুয়েট তৈরি করতে সরকার কত টাকা খরচ করে?”
“স্বাধীনতা ভালো, তবে তাহা বালকের জন্য নহে। এটাও একটা কথা আছে। কারণ স্বাধীনতার যে মর্যাদা দিতে পারবে, তার জন্যই ভাল। সেটাও মাথায় রাখতে হবে,” বলেন তিনি।