“যদি প্রমাণিত হয় যে তারা দুর্নীতির মাধ্যমে সুবিধাভোগী হয়েছে, তাহলে সেই সম্পদ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা উচিত, যা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য।”
Published : 15 Jan 2025, 01:36 AM
বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া জনগণের টাকা ‘ফিরিয়ে আনতে’ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশীদারের সাথে একত্রে কাজ করে জনগণের কাছ থেকে চুরি হওয়া অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি।”
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন, যা ‘বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক নাগরিকের মতামতের প্রতিফলন’।
“তিনি বলেছেন, চুরি হওয়া অর্থের সাথে যুক্ত সম্পদ এবং সম্পত্তি, যার মধ্যে পূর্ববর্তী সরকারের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পত্তিও অন্তর্ভুক্ত, সেগুলোর ব্যাপারে সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া উচিত। যদি প্রমাণিত হয় যে তারা দুর্নীতির মাধ্যমে সুবিধাভোগী হয়েছে, তাহলে সেই সম্পদ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা উচিত, যা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য।”
বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব দু্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাতে তার ভাগ্নি, যুক্তরাজ্য সরকারের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকীর নাম আসার পর লন্ডনের সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেছিলেন, “লন্ডনে তিনি যে অর্থ ও সম্পত্তি উপভোগ করছিলেন তার উৎস টিউলিপ সিদ্দিক হয়ত পুরোপুরি বুঝতে পারেননি, তবে তিনি এখন জানেন এবং বাংলাদেশের জনগণের কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এই বিবৃতি আসার ঘণ্টা দুয়েক আগে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগের খবর আসে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য। এই ধরনের সহযোগিতা আর্থিক অপরাধের আন্তঃদেশীয় নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
“আমরা আশা করি এবং প্রত্যাশা করি যুক্তরাজ্যসহ সকল বন্ধুরাষ্ট্র এই অপরাধের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। দুর্নীতি শুধুমাত্র অপরাধীদের এবং তাদের আত্মীয় ও সহযোগীদেরই উপকৃত করে।”
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ‘৫ বিলিয়ন ডলার তছরুপের’ চলমান তদন্ত আগের সরকারের অধীনে ‘দুর্নীতির ব্যাপকতাকে প্রমাণ করে’।
“এ মধ্য দিয়ে কেবল বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে সম্পদ চুরি করা হয়নি, বরং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পথেও বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “চুরি হওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের জনগণের প্রাপ্য। আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে একত্রে কাজ চালিয়ে যাব, যাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়।”